Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম (আরএসএস)

 

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়িত পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রম দেশের পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত দুঃস্থ, অসহায়, অবহেলিত, অনগ্রসর ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রমের সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ/দারিদ্র্য বিমোচনের সুতিকাগার এবং পথিকৃৎ হিসেবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রে সূচনা করে এক নতুন ও বর্ণিল ইতিহাস।পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রমের আওতায় বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সূত্রপাত। ফলে এ কার্যক্রমটি বাংলাদেশ ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সুতিকাগার এবং পথিকৃৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এ কর্মসূচি বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রে সূচনা করে এক নতুন ও যুগান্তকারী ইতিহাস।

 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় সমাজসেবা অধিদফতর ১৯৭৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে তৎকালীন ১৯টি থানায় ‘পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম’ শুরু করে। এর সফলতার আলোকে ১৯৭৭ সালে আরও ২১টি থানায় এ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। পরবর্তীতে সম্প্রসারিত পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম ২য় পর্বে (১৯৮০-৮৭) ১০৩টি উপজেলায়, ৩য় পর্বে (১৯৮৭-৯২) ১২০টি উপজেলায়, ৪র্থ পর্বে (১৯৯২-৯৫) ৮১টি উপজেলায়, ৫ম পর্বে (১৯৯৫-২০০২) ১১৯টি উপজেলায়, ৬ষ্ঠ পর্বে (২০০৪-০৭) ৪৭০টি উপজেলায় এবং বর্তমানে এরই ধারাবাহিকতায় দেশের সকল উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত ভূমিহীন, দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করে বিভিন্ন কর্মদলে সুসংগঠিত করা হয়ে থাকে এবং সুদমুক্ত ক্ষুদ্র পুঁজি প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদনমূলক ও আয়বর্ধক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করে দেশের সকল প্রকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।

 

উদ্দেশ্য

 

এ কার্যক্রমের মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত ভূমিহীন, দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসরত জনগোষ্ঠির মধ্যে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিও আয়বর্ধক কর্মসূচিতে তাঁদের সম্পৃক্ত করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব ও সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মোট ১৬ সদস্য বিশিষ্ট পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি (ইউপিআইসি) উপজেলা পর্যায়ে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

 

পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রমের বাস্তবায়ন অগ্রগতি

  • কার্যক্রম প্রথম শুরু: ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ
  • আওতাভুক্ত উপজেলা সংখ্যা: ৪৯২ টি
  • সর্বমোট প্রাপ্ত বরাদ্দের পরিমাণ: ৫৫৪ কোটি ৯৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা
  • ক্ষুদ্রঋণ হিসাবে সর্বমোট বরাদ্দের পরিমাণ : ৫৪৮ কোটি ৭৭ লক্ষ ১৮ হাজার  টাকা
  • ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে বিনিয়োগকৃত মূল অর্থের পরিমাণ: ৪৬৩ কোটি ৯১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা
  • মূল অর্থ আদায়ের পরিমাণ: ৪৭৮ কোটি ৮২ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা
  • মূল অর্থ আদায়ের হার: ৯০%
  • ক্রমপুঞ্জিত পুনঃবিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ : ১০১৫ কোটি ৫৮ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা               
  • ক্রমপুঞ্জিত পুনঃবিনিয়োগের অর্থ আদায়ের হার: ৮৮%
  • আদায়কৃত মোট সার্ভিস চার্জের পরিমাণ: ১৬২ কোটি ৯৯ লক্ষ ৮ হাজার টাকা
  • প্রাপ্ত ব্যাংক সুদের পরিমাণ : ৩৬ কোটি ৬৮ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা 
  • উপকারভোগীদের ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের পরিমাণ : ২২ কোটি ০৭ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা
  • শুরু হতে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে মোট উপকারভোগীর সংখ্যা: ৩৪ লক্ষ ৯০ হাজার ৭২৭ টি পরিবার
  • বর্তমান ঋণগ্রহীতার সংখ্যা: ৯ লক্ষ ৬৮ হাজার ২৭৬ টি পরিবার
  • সদর দফতরে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ : ৬.১৬ কোটি টাকা
  • ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেটে ‘পল্লী সমাজসেবা (আরএসএস) কার্যক্রম’ খাতে ৭৫.০০ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে। উক্ত অর্থ ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে বিতরণের জন্য মাঠ পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

সেবা:

  • দরিদ্র জনগণকে সংগঠিত করে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসা;
  • দরিদ্রতা বিমোচন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন;
  • সচেতনতামূলক উদ্বুদ্ধকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন;
  • পরিবার প্রতি সর্বনিম্ন ৫,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণ ;
  • আদায়কৃত সার্ভিস চার্জের অর্থ দিয়ে লক্ষ্যভুক্ত ব্যক্তিদের টেকসই সংগঠন (পল্লী সমাজেসবা গ্রাম সমিতি) সৃষ্টি ও গ্রাম সমিতি’র নিজস্ব পুঁজি গঠন।

 

সেবা গ্রহীতা:

 

  • নির্বাচিত গ্রামের বাসিন্দা;
  • পল্লী সমাজসেবা কর্মদলের দলীয় সদস্য;
  • যে সদস্যের পরিবারের বার্ষিক গড় আয় ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত (দরিদ্রতম) ‘ক’ শ্রেণি
  • পরিবারের বার্ষিক গড় আয় ৫০,০০১ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত (দরিদ্র) ‘খ’শ্রেণি
  • পরিবারের বার্ষিক গড় আয় ৬০,০০১ টাকার ঊর্ধেব (দারিদ্র্যসীমার ঊর্ধে) ‘গ’ শ্রেণি
  • ‘ক’ ও ‘খ’শ্রেণি ক্ষুদ্রঋণসহ অন্যান্য সেবা এবং গ শ্রেণি সুদমুক্ত ঋণ ব্যতীত অন্যান্য সামাজিক সেবা;

 

কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টগণ:

 

কেন্দ্রিয় পর্যায়ে সমাজসেবা অধিদফতরের কার্যক্রম শাখা এ কার্যক্রমটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করে থাকে। পরিচালক (কার্যক্রম) এর নেতৃত্বে একজন অতিরিক্ত পরিচালক, একজন উপ-পরিচালক, ১ জন সহকারী পরিচালক, ২ জন উপ-সহকারী পরিচালক, ১ জন সমাজসেবা অফিসার সদর দপ্তর পর্যায়ে এবং মাঠপর্যায়ে ৪৯২ জন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট।

 

জেলা পর্যায়ের ৬৪টি জন উপ-পরিচালক ও ১০০ জন সহকারী পরিচালক মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম তদারকি এবং মাঠ পর্যায় ও সদর দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে থাকেন। উপজেলায় পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি কার্যক্রমটি’র বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটির যথাক্রমে সদস্য-সচিব ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত। ইউনিয়ন সমাজকর্মী ও ট্রেনিং ইন্সট্রাকটরগণ গ্রাম পর্যায়ে সেবা গ্রহীতাগণের সাথে সরাসরি কাজ করে থাকেন। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ফিল্ডসুপারভাইজার ইউনিয়ন সমাজকর্মী ও ট্রেনিং ইন্সট্রাকটরগণের কার্যক্রম তদারকী করেন এবং কার্যক্রমের সার্বিক সমন্বয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে সহায়তা করেন।

 

সেবাদান কেন্দ্র:

৪৯২টি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়;

 

কার্যাবলি:

  • গ্রাম নির্বাচন;
  • গ্রাম জরিপ;
  • লক্ষ্যভুক্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সংগঠিত করে দলগঠন;
  • গ্রাম/মহল্লা কমিটি গঠন;
  • সাক্ষর জ্ঞান প্রদান;
  • বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ;
  • (পরিবার পরিকল্পনা, বাড়ীর আঙ্গিনায় সব্জিচাষ, সামাজিক বনায়ন, নিরাপদ পানি পান, স্যানিটেশন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পুষ্টি সচেতনতা, পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভবতী মায়ের যত্ন, শিশুদের টিকা দান, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন ও যৌতুক বিরোধী সচেতনতা, মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, শিশুদের স্কুলে প্রেরণ ইত্যাদি)
  • বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান;
  • ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্তির জন্য নির্ধারিত আবেদন পত্রে আবেদনপত্র গ্রহণ;
  • আর্থ সামজিক উন্নয়নে উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচন;
  • চুক্তি সম্পাদন;
  • সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান;
  • নিজস্ব পুঁজিসহ সংগঠন তৈরীতে সহযোগিতা।

 

সেবা প্রদান পদ্ধতি (সংক্ষেপে):

 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক  নির্বাচিত গ্রামে ইউনিয়ন সমাজকর্মী/কারিগরি প্রশিক্ষক কর্তৃক পরিবার জরিপ সম্পন্নকরণপূর্বক  ক ও খ  গ্রুপভুক্ত পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে কর্মদল গঠন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের পর প্রত্যেক দলীয় সদস্যকে ২০ টি সামাজিক কার্যক্রম অবহিতপূর্বক অভ্যস্ত করানো হয়। অতঃপর গ্রাম কমিটি বা কর্মদল হতে প্রস্তাবিত ঋণ প্রার্থীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইপূর্বক আবেদনপত্রসহ খসড়া তালিকা সংশ্লিষ্ট সমাজকর্মী/কারিগরি প্রশিক্ষক দাখিল করেন এবং আদায়কৃত সঞ্চয় প্রকল্প গ্রাম বা কর্মদলের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। প্রস্ত্ততকৃত খসড়া তালিকা, আবেদনপত্র, স্কিম ফিল্ডসুপারভাইজার কর্তৃক পরীক্ষান্তে সুপারিশসহ উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের নিকট দাখিল করেন। অতঃপর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ইউপিআইসির সভার আয়োজন করে ঋণ অনুমোদন করেন। অবশেষে নির্বাচিত ঋণ গ্রহীতাদের মাঝে ঋণের চেক/নগদ টাকা বিতরণের স্থান, তারিখ নির্ধারণ করে তাদের অবহিতপূর্বক ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। 

 

নাগরিকদের সহযোগিতার ক্ষেত্র:

 

  • সুবিধাভোগী কর্তৃক ঋণ প্রাপ্তির পর ২য় মাস হতে সমান ১০ কিস্তিতে অথবা স্কীম ভেদে ১, ২ বা ৩ কিস্তিতে ঋণের অর্থ শতকরা ১০ ভাগ সার্ভিসচার্জসহ ফেরত দেয়া;
  • একজন ঋণগ্রহীতা প্রয়োজনে সর্বাধিক তিনবার ঋণ গ্রহণ না করা;
  • দলীয় সদস্য কর্তৃক নিয়মিত নির্ধারিত হারে সঞ্চয় করা;
  • কার্যক্রমের মাধ্যমে সদস্যদের যে সকল বিষয়ে সচেতন করা হয় তা মেনে চলা;
  • কোন সুবিধাভোগী প্রাপ্ত ঋণের অর্থ নিয়মমত পরিশোধ না করলে তা আদায়ে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা;
  • সঠিক গ্রাম/মহল্লা ও উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচনে কর্তৃপক্ষকে তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা;
  • ঋণ প্রদানে কোন অসচ্ছতা পরিলক্ষিত হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট অবহিত করা।

 

প্রয়োজনীয় ফি/ট্যাক্স/আনুষঙ্গিক খরচ:

 

  • বিনামূল্যে

 

সেবা প্রদানের সময়সীমা:

 

  • গ্রাম/মহল্লা নির্বাচনের পর ১ম বার ঋণ প্রদান ১ মাস;
  • পুনবিনিয়োগ/২য়/৩য় পর্যায়ের ঋণ প্রদান, আবেদনের পর ২০ দিন।

 

নির্দিষ্টসেবা পেতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী প্রতিকারকারী কর্মকর্তা

 

১. উপজেলা নির্বাহী অফিসার (কেশবপুর)

২. উপপরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, যশোর

৩. পরিচালক (কার্যক্রম), সমাজসেবা অধিদফতর